Dhaka 4:53 pm, Wednesday, 12 March 2025

শান্তিগঞ্জে গরুর ধান খাওয়া নিয়ে দুই গ্রামবাসীর সংঘর্ষে আহত অর্ধশতাধিক

  • Reporter Name
  • Update Time : 04:31:26 pm, Sunday, 16 February 2025
  • 39 Time View

 

সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি

সুনামগঞ্জের শান্তিগঞ্জ উপজেলার জয়কলস ইউনিয়নে গরুর ধান খাওয়ানোকে কেন্দ্র ঘন্টাব্যাপী দু”গ্রামবাসির সংঘর্ষে উভয়পক্ষের ৫০ জন আহত হয়েছেন।

স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়,রবিবার সকালে উপজেলার আস্তমা গ্রামের উত্তরে ও কামরূপদলং মাদ্রাসার পূর্বে পশ্চিম বন্দে এই দুই গ্রামবাসির মধ্যে ঘন্টাব্যাপী এই সংঘর্ষের ঘটনাটি ঘটে।

ঘটনায় আস্তমা গ্রামের দুইজনের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাদেরকে সিলেটের এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। অপরদিকে কামরূপদলং গ্রামের গুরুতর তিনজনকে সুনামগঞ্জ জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। অন্যান্য আহতদেরকে শান্তিগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।

আস্তমা গ্রামের পক্ষের আহতরা হলেন- আক্তার হোসেন (৩০), দুলাল মিয়া (২০), জুয়েল মিয়া (৩০), শামসুজ্জামান (২৮), নাছির আলী (৫০), আবদুল জলিল (৩০), খাইরুল আমীন (২৬), এমরান হোসেন (২৮), সাদিক মিয়া (৪৫), নুরুজ্জামান (৩৫) ও সৌরভ হোসেন (২৬)। এছাড়াও এ গ্রামের পক্ষে আরো ১০/১৫ জন লোক আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। তবে তাৎক্ষণিক তাদের নাম পরিচয় জানা যায়নি। আক্তার হোসেন ও দুলাল মিয়া গুরুতর আহত হওয়ায় তাদেরকে সিলেটের এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

এদিকে, কামরূপদলং গ্রামের পক্ষের আহতরা হলেন- বাতির আলী (৫৬), সুন্দর আলী (৭০), সুজন মিয়া (৩৫), কালাই মিয়া (২৭), মতিউর রহমান (৩২), শওকত আলী (২৭), নবী হোসেন (২২) ও শাফি আহমেদ (২৫)। তাদের পক্ষের আহত আরও ৭/৮ জনের নাম তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি। গুরুতর আহত বাতির আলী, সুন্দর আলী ও সুজন মিয়াকে সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

গত ১৫ই ফেব্রুয়ারী(শনিবার) বিকালে আস্তমা গ্রামের কৃষক বজলু মিয়ার একটি গরু কামরূপদলং গ্রামের কৃষক সুরুজ মিয়ার জমির ধান খায়। এ বিষয় নিয়ে জমিতেই দুই কৃষকের মধ্যে বাকবিতন্ডা ও মারামারির ঘটনা ঘটে। এই ঘটনায় জেরে দুই গ্রামের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে এবং রবিবার সকালে উভয় গ্রামবাসি দেশীয় ও দাড়াঁলো অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। এতে উভয়পক্ষে কমপক্ষে ৫০ জন আহত হন। খবর পেয়ে শান্তিগঞ্জ থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনেন।

আস্তমা গ্রামের পক্ষে আঙ্গুর মিয়া জানান, গরু বোবা প্রাণী। গরুর ধান খাওয়াকে কেন্দ্র করে বজলু মিয়া ও তার পরিবারের লোকজনকে মারধর করে জমির মালিক, কামরূপদলং গ্রামের কৃষক সুরুজ মিয়া। এতে আমাদের গ্রামের মধ্য উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। সন্ধ্যায় কামরূপদলং গ্রামের পক্ষে নুরুল ইসলাম, ইকবাল হোসেনসহ বেশ ক‘জন এসেছিলেন ঘটনাটি সালিশ মীমাংসার মাধ্যমে শেষ করে দিতে। আমরা তাদের আশ্বস্থ করেছিলাম, গ্রামবাসীর সাথে কথা বলে এর মীমাংসা হবে। কিন্তুরবিবার সকালে আবারো উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লে পরিস্থিতি আমাদের নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়।

কামরূপদলং গ্রামের বাসিন্দা নুরুল ইসলাম জানান, গরুর ধান খাওয়াকে কেন্দ্র করে শনিবারে একটি হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছিল। আমরা চেয়েছিলাম বিষয়টি গ্রাম্য সালিসের মাধ্যমে নিস্পতি করতে। কিন্তু আস্তমা গ্রামবাসী বিচার না মেনে সকালে মাইকে ঘোষণা দিয়ে দেশীয় দাড়াঁলো অস্ত্র¿ নিয়ে আমাদের গ্রামের দিকে আক্রমন করে। পরে আর কোনো কিছুই কন্ট্রোলে থাকে নি।

এ ব্যাপারে শান্তিগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আকরাম আলী সংঘর্ষের ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান,সংঘর্ষের খবর পাওয়া মাত্রই পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে। ঘটনায় এখনো কাউকে আটক করা হয়নি।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

Popular Post

বাংলা উচ্চারণ ও অর্থসহ দোয়া কুনুত

শান্তিগঞ্জে গরুর ধান খাওয়া নিয়ে দুই গ্রামবাসীর সংঘর্ষে আহত অর্ধশতাধিক

Update Time : 04:31:26 pm, Sunday, 16 February 2025

 

সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি

সুনামগঞ্জের শান্তিগঞ্জ উপজেলার জয়কলস ইউনিয়নে গরুর ধান খাওয়ানোকে কেন্দ্র ঘন্টাব্যাপী দু”গ্রামবাসির সংঘর্ষে উভয়পক্ষের ৫০ জন আহত হয়েছেন।

স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়,রবিবার সকালে উপজেলার আস্তমা গ্রামের উত্তরে ও কামরূপদলং মাদ্রাসার পূর্বে পশ্চিম বন্দে এই দুই গ্রামবাসির মধ্যে ঘন্টাব্যাপী এই সংঘর্ষের ঘটনাটি ঘটে।

ঘটনায় আস্তমা গ্রামের দুইজনের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাদেরকে সিলেটের এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। অপরদিকে কামরূপদলং গ্রামের গুরুতর তিনজনকে সুনামগঞ্জ জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। অন্যান্য আহতদেরকে শান্তিগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ও সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।

আস্তমা গ্রামের পক্ষের আহতরা হলেন- আক্তার হোসেন (৩০), দুলাল মিয়া (২০), জুয়েল মিয়া (৩০), শামসুজ্জামান (২৮), নাছির আলী (৫০), আবদুল জলিল (৩০), খাইরুল আমীন (২৬), এমরান হোসেন (২৮), সাদিক মিয়া (৪৫), নুরুজ্জামান (৩৫) ও সৌরভ হোসেন (২৬)। এছাড়াও এ গ্রামের পক্ষে আরো ১০/১৫ জন লোক আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। তবে তাৎক্ষণিক তাদের নাম পরিচয় জানা যায়নি। আক্তার হোসেন ও দুলাল মিয়া গুরুতর আহত হওয়ায় তাদেরকে সিলেটের এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

এদিকে, কামরূপদলং গ্রামের পক্ষের আহতরা হলেন- বাতির আলী (৫৬), সুন্দর আলী (৭০), সুজন মিয়া (৩৫), কালাই মিয়া (২৭), মতিউর রহমান (৩২), শওকত আলী (২৭), নবী হোসেন (২২) ও শাফি আহমেদ (২৫)। তাদের পক্ষের আহত আরও ৭/৮ জনের নাম তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি। গুরুতর আহত বাতির আলী, সুন্দর আলী ও সুজন মিয়াকে সুনামগঞ্জ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

গত ১৫ই ফেব্রুয়ারী(শনিবার) বিকালে আস্তমা গ্রামের কৃষক বজলু মিয়ার একটি গরু কামরূপদলং গ্রামের কৃষক সুরুজ মিয়ার জমির ধান খায়। এ বিষয় নিয়ে জমিতেই দুই কৃষকের মধ্যে বাকবিতন্ডা ও মারামারির ঘটনা ঘটে। এই ঘটনায় জেরে দুই গ্রামের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে এবং রবিবার সকালে উভয় গ্রামবাসি দেশীয় ও দাড়াঁলো অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। এতে উভয়পক্ষে কমপক্ষে ৫০ জন আহত হন। খবর পেয়ে শান্তিগঞ্জ থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনেন।

আস্তমা গ্রামের পক্ষে আঙ্গুর মিয়া জানান, গরু বোবা প্রাণী। গরুর ধান খাওয়াকে কেন্দ্র করে বজলু মিয়া ও তার পরিবারের লোকজনকে মারধর করে জমির মালিক, কামরূপদলং গ্রামের কৃষক সুরুজ মিয়া। এতে আমাদের গ্রামের মধ্য উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। সন্ধ্যায় কামরূপদলং গ্রামের পক্ষে নুরুল ইসলাম, ইকবাল হোসেনসহ বেশ ক‘জন এসেছিলেন ঘটনাটি সালিশ মীমাংসার মাধ্যমে শেষ করে দিতে। আমরা তাদের আশ্বস্থ করেছিলাম, গ্রামবাসীর সাথে কথা বলে এর মীমাংসা হবে। কিন্তুরবিবার সকালে আবারো উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লে পরিস্থিতি আমাদের নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়।

কামরূপদলং গ্রামের বাসিন্দা নুরুল ইসলাম জানান, গরুর ধান খাওয়াকে কেন্দ্র করে শনিবারে একটি হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছিল। আমরা চেয়েছিলাম বিষয়টি গ্রাম্য সালিসের মাধ্যমে নিস্পতি করতে। কিন্তু আস্তমা গ্রামবাসী বিচার না মেনে সকালে মাইকে ঘোষণা দিয়ে দেশীয় দাড়াঁলো অস্ত্র¿ নিয়ে আমাদের গ্রামের দিকে আক্রমন করে। পরে আর কোনো কিছুই কন্ট্রোলে থাকে নি।

এ ব্যাপারে শান্তিগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আকরাম আলী সংঘর্ষের ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান,সংঘর্ষের খবর পাওয়া মাত্রই পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে। ঘটনায় এখনো কাউকে আটক করা হয়নি।