Dhaka 5:49 pm, Wednesday, 5 February 2025

গণত্যার বিচার করতে হবে, জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, ফ‍্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলনে গণহত্যাকারীদের বিচার করতে হবে।

 

যাদের গুম করা হয়েছিল এবং এখনো যারা গুম রয়েছেন সেসব অপরাধের অবশ্যই বিচারের আওতায় নিয়ে আসতে হবে। বিচারকাজ আস্তে আস্তে হোক আমাদের আপত্তি নেই। তবে অপরাধীদের বিচার নিশ্চিত করতে হবে। জুলাই আন্দোলনে খুনের বিচারে কোনো আপস নয়, প্রতিটা খুনের বিচার হতে হবে। আমরা ন‍্যায় বিচার চাই, বৈষম্য চাই না।

শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১১টায় সুনামগঞ্জ জেলা শহরের জুবিলী উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে আয়োজিত কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

জামায়াতের আমির ডা.শফিকর রহমান আরও বলেন, আমাদের পেট বন্ধক দিয়েছি অন্য দেশে। মাথাও বন্ধক দিয়েছি কি না আল্লাহ জানেন। দেশের মেধাবীরা দেশ থেকে পড়াশোনার জন্য গেলে আর ফিরে। কিন্তু দু থেকে আড়াইশ বছর আগেও আমাদের দেশের উপর মোগলরা বৃটিশরা পতূগীজরা ঝাপিয়ে পড়তও ভাগ্য গড়ার জন্য। কিন্তু এখন উল্টো রথ কেন। তিনি বলেন, সুপ্রিম কোর্টের একজন বিচারককে কি আপনারা দেখেছেন কলা পাতায় ঘুমিয়েছেন। এটা তার পরিণতি। তিনি ক্ষমতায় থাকাকালীন সময়ে ক্ষমতার অপ ব্যবহার করেছেন।

জামায়াতের আমির আওয়ামী লীগকে ইঙ্গিত করে বলেন, অনেকেই আমাদেরকে পাসপোর্ট ভিসা টিকেট ছাড়াই অমুক দেশে তুমুক দেশে পাঠিয়ে দিতেন। কিন্তু তারাই এখন পালিয়ে গেলও পাসপোর্ট ভিসা ছাড়া। তিনি বলেন, দুনিয়ার জেলকে আমরা পরোয়া করি না। আমাদের মাথার তাজ পাঁচ জন নেতাকে একে একে ফাঁসি দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এই ফাঁসির দড়ি তাদের কাছে জুতার ফিতার মতও।

জুলাই আগস্টের বিপ্লবের প্রসঙ্গটেনে জামায়াতের আমির আরও বলেন, গণহত্যার বিচার হতে হবে। বিগত সময়ে এবং ছাত্র জনতার আন্দোলনের সময় যারা মানুষ হত্যা করেছে তাদের বিচার এ দেশে নিশ্চিত করতে হবে। নির্বাচন প্রয়োজনে আরও পরে দেয়া হোক।

ডা.শফিকুর রহমান নিজের দলের নেতাকর্মীর সম্পর্কে বলেন, আমাদের নেতাকর্মীরা কোনও জল মহাল বালু মহাল কোনও কিছুতেই ঝাপিয়ে পড়ছে না। আমাদের নেতাকর্মীরা চাঁদাবাজির সাথে জড়িত না। আমাদের নেতারা মামলা বাণিজ্যর সাথে জড়িত না। কেউ যদি অপরাধ করে তাকে আইনের আওতায় নিয়ে আসুন।

কিন্তু নিরীহ মানুষ কাউকে হয়রানি করা যাবে না। আমাদের নেতাকর্মীরা ৫ আগস্টের পর থেকে টানা ১৫ দিন স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে পাহাড়া দিয়েছে। সকল ধর্মের মানুষের জন্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করার চেষ্টা করেছি। গত জালেম সরকার ১০ হাজার রাজাকারের তালিকা তৈরি করেছে। সেই তালিকায় ৮০ ভাগ লোকই আওয়ামী লীগের।

জামায়াতের আমির জানান, আমরা যদি ক্ষমতায় যেতে পারি তা হলে আমরা শিক্ষায় সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিব। আমরা যে আধুনিক শিক্ষার ব্যবস্থা গড়ে তুলবো সে শিক্ষা হবে কর্মমুখী শিক্ষা। একজন পড়াশোনা শেষ করার সাথে সাথে ঐ শিক্ষা সংশ্লিষ্ট সাটিফিকেট তুলে দেয়া হবে।

সুনামগঞ্জ জেলা জামায়াতের আমীর মাওলানা তোফায়েল আহমদের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের, জামায়াতে ইসলামীর ঢাকা মহানগর উত্তরের আমীর মুহাম্মদ সেলিম উদ্দিন, জামায়াতে ইসলামীর সিলেট মহানগর উত্তরের আমীর ফখরুল ইসলাম, জামায়াতে ইসলামীর সিলেট জেলা শাখার আমীর মাওলানা হাবিবুর রহমান, কেন্দ্রীয় ছাত্র শিবিরের সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির, সুনামগঞ্জ জেলা জামায়াতের নায়েবে আমীর অ্যাভোকোট শামসউদ্দিন প্রমুখ।

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Popular Post

গণত্যার বিচার করতে হবে, জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান

Update Time : 10:05:17 am, Saturday, 1 February 2025

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, ফ‍্যাসিবাদ বিরোধী আন্দোলনে গণহত্যাকারীদের বিচার করতে হবে।

 

যাদের গুম করা হয়েছিল এবং এখনো যারা গুম রয়েছেন সেসব অপরাধের অবশ্যই বিচারের আওতায় নিয়ে আসতে হবে। বিচারকাজ আস্তে আস্তে হোক আমাদের আপত্তি নেই। তবে অপরাধীদের বিচার নিশ্চিত করতে হবে। জুলাই আন্দোলনে খুনের বিচারে কোনো আপস নয়, প্রতিটা খুনের বিচার হতে হবে। আমরা ন‍্যায় বিচার চাই, বৈষম্য চাই না।

শনিবার (১ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১১টায় সুনামগঞ্জ জেলা শহরের জুবিলী উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে আয়োজিত কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

জামায়াতের আমির ডা.শফিকর রহমান আরও বলেন, আমাদের পেট বন্ধক দিয়েছি অন্য দেশে। মাথাও বন্ধক দিয়েছি কি না আল্লাহ জানেন। দেশের মেধাবীরা দেশ থেকে পড়াশোনার জন্য গেলে আর ফিরে। কিন্তু দু থেকে আড়াইশ বছর আগেও আমাদের দেশের উপর মোগলরা বৃটিশরা পতূগীজরা ঝাপিয়ে পড়তও ভাগ্য গড়ার জন্য। কিন্তু এখন উল্টো রথ কেন। তিনি বলেন, সুপ্রিম কোর্টের একজন বিচারককে কি আপনারা দেখেছেন কলা পাতায় ঘুমিয়েছেন। এটা তার পরিণতি। তিনি ক্ষমতায় থাকাকালীন সময়ে ক্ষমতার অপ ব্যবহার করেছেন।

জামায়াতের আমির আওয়ামী লীগকে ইঙ্গিত করে বলেন, অনেকেই আমাদেরকে পাসপোর্ট ভিসা টিকেট ছাড়াই অমুক দেশে তুমুক দেশে পাঠিয়ে দিতেন। কিন্তু তারাই এখন পালিয়ে গেলও পাসপোর্ট ভিসা ছাড়া। তিনি বলেন, দুনিয়ার জেলকে আমরা পরোয়া করি না। আমাদের মাথার তাজ পাঁচ জন নেতাকে একে একে ফাঁসি দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এই ফাঁসির দড়ি তাদের কাছে জুতার ফিতার মতও।

জুলাই আগস্টের বিপ্লবের প্রসঙ্গটেনে জামায়াতের আমির আরও বলেন, গণহত্যার বিচার হতে হবে। বিগত সময়ে এবং ছাত্র জনতার আন্দোলনের সময় যারা মানুষ হত্যা করেছে তাদের বিচার এ দেশে নিশ্চিত করতে হবে। নির্বাচন প্রয়োজনে আরও পরে দেয়া হোক।

ডা.শফিকুর রহমান নিজের দলের নেতাকর্মীর সম্পর্কে বলেন, আমাদের নেতাকর্মীরা কোনও জল মহাল বালু মহাল কোনও কিছুতেই ঝাপিয়ে পড়ছে না। আমাদের নেতাকর্মীরা চাঁদাবাজির সাথে জড়িত না। আমাদের নেতারা মামলা বাণিজ্যর সাথে জড়িত না। কেউ যদি অপরাধ করে তাকে আইনের আওতায় নিয়ে আসুন।

কিন্তু নিরীহ মানুষ কাউকে হয়রানি করা যাবে না। আমাদের নেতাকর্মীরা ৫ আগস্টের পর থেকে টানা ১৫ দিন স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে পাহাড়া দিয়েছে। সকল ধর্মের মানুষের জন্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করার চেষ্টা করেছি। গত জালেম সরকার ১০ হাজার রাজাকারের তালিকা তৈরি করেছে। সেই তালিকায় ৮০ ভাগ লোকই আওয়ামী লীগের।

জামায়াতের আমির জানান, আমরা যদি ক্ষমতায় যেতে পারি তা হলে আমরা শিক্ষায় সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিব। আমরা যে আধুনিক শিক্ষার ব্যবস্থা গড়ে তুলবো সে শিক্ষা হবে কর্মমুখী শিক্ষা। একজন পড়াশোনা শেষ করার সাথে সাথে ঐ শিক্ষা সংশ্লিষ্ট সাটিফিকেট তুলে দেয়া হবে।

সুনামগঞ্জ জেলা জামায়াতের আমীর মাওলানা তোফায়েল আহমদের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের, জামায়াতে ইসলামীর ঢাকা মহানগর উত্তরের আমীর মুহাম্মদ সেলিম উদ্দিন, জামায়াতে ইসলামীর সিলেট মহানগর উত্তরের আমীর ফখরুল ইসলাম, জামায়াতে ইসলামীর সিলেট জেলা শাখার আমীর মাওলানা হাবিবুর রহমান, কেন্দ্রীয় ছাত্র শিবিরের সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির, সুনামগঞ্জ জেলা জামায়াতের নায়েবে আমীর অ্যাভোকোট শামসউদ্দিন প্রমুখ।